মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। করোনাভাইরাস নিয়ে বেইজিংয়ের পরিণতির ক্ষেত্রে তিনি বিভিন্ন বিকল্পের কথাও বিবেচনা করছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ নিয়ে ‘আমি অনেক কিছু করতে পারি।’ তবে, ঠিক কি করতে পারেন তা অবশ্য পরিষ্কার করেননি।
২৯ এপ্রিল, বুধবার ওভাল অফিসে রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এসব কথা বলেন।
রয়টার্সের তথ্যানুসারে, করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে কমপক্ষে ৬০ হাজার মানুষ মারা গেছে এবং এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি একটি দীর্ঘ মন্দার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, আরো চার বছরের মেয়াদে ট্রাম্পের নির্বাচিত হওয়ার আশাকে ধ্বংস করার জন্য চীনকে দোষারোপ করছেন।
যদিও ট্রাম্পকে প্রায়শই আমেরিকায় ভাইরাস সংক্রমণের জন্য প্রস্তুত করার জন্য পর্যাপ্ত পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযুক্ত করা হয়। তবে, ট্রাম্প বলেছেন তিনি মনে করেন বিশ্বকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে আগেই জানাতে চীনের আরো বেশি সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল।
তিনি চীনের জন্য শুল্ক বা বাণিজ্য অবরোধ আরোপ করবেন কিনা জানতে চাইলে ট্রাম্প এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কিছু বলেননি। তবে তিনি বলেন, ‘আমি অনেক কিছুই করতে পারি। কী ঘটেছে এখন তা অনুসন্ধান করছি আমরা।’
ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমাকে নির্বাচনে হারাতে চীন তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।’ তিনি বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে বেইজিং তার ডেমোক্র্যাটিক প্রতিপক্ষ জো বাইডেনকে জেতাতে চায় কারণ বাণিজ্য ও অন্যান্য ইস্যু নিয়ে ট্রাম্প চীনের উপর যে চাপ দিচ্ছেন সেটা থেকে বাঁচার জন্যই চীন তাকে হারানোর জন্য চেষ্টা করবে।
চীন সম্পর্কে তিনি বলছিলেন যে চীন নিরপরাধের ভাব ধরে প্রতিনিয়ত জনসংযোগ করে চলেছে।
তিনি বলেছিলেন, চীনের সাথে দীর্ঘকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করার লক্ষ্যে তিনি চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সাথে যে বাণিজ্য চুক্তি করেছিলেন, ভাইরাস আক্রমণের ফলে সব ‘অত্যন্ত খারাপ দিকে চলে গেলো’।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ট্রাম্প প্রশাসনের এক প্রবীণ কর্মকর্তা বুধবার বলেছিলেন যে ট্রাম্প এবং শি এর মধ্যে মার্চ মাসের শেষের দিকে পারস্পরিক উত্তেজনা এড়ানোর ব্যাপারে যে একমত হয়েছিলেন সেটা এখন শেষ হয়ে গেছে।
তখন দুই নেতা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তাদের সরকারগুলো করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে, ওয়াশিংটন এবং বেইজিং ভাইরাসটির উৎস এবং এর প্রতিক্রিয়া নিয়ে ক্রমবর্ধমান তিক্ততায় জড়িয়ে পড়ছেন।
তবে ট্রাম্প এবং তার শীর্ষ সহযোগীরা চীনবিরোধী বক্তৃতা প্রকাশের সময় শি’র সরাসরি সমালোচনা করছেন না। বরং তাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারবার তার ‘বন্ধু’ বলে অভিহিত করেছেন।
ট্রাম্প আরো বলেছিলেন, দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আরো বেশি অর্থ প্রদান করতে সম্মত হয়েছে তবে তা কতটা তা পরিষ্কার করেননি।
‘আমরা একটি চুক্তি করতে পারি। তারাও একটি চুক্তি করতে চায়।’ ট্রাম্প বলেছিলেন ‘তারা প্রচুর অর্থ দিতে সম্মত হয়েছে। জানুয়ারি ২০১৭ এ আমি যখন এখানে এসেছি তখন তারা অনেক বেশি অর্থ প্রদান করছে।’
যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার সেনা রয়েছে। ১৯৫০-৫৩ কোরিয়ান যুদ্ধ দুই কেরিয়ার মধ্যে শান্তিচুক্তির পরিবর্তে মাধ্যমে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছিল, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ নিয়েছিলো।
ট্রাম্প বর্তমানে অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়ে চিন্তিতমুখে বলেন, আগে আমাদের অর্থনীতি ছিলো এক নম্বরে। এখন তা বেশ নাজুক অবস্থায় আছে। তিনি আরো বলেন, অনেক প্রদেশের গভর্নররা করোনা নিয়ে ভালো কাজ করেছন, অনেকে তা করছেন না।
উল্লেখ্য, আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেনশিয়াল ইলেকশান হওয়ার কথা।