1. riajul.kst1@gmail.com : riajul :
  2. riajul.kst@gmail.com : riajul.kst@gmail.com :
মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩, ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

 ভারতের কেরালার এক লড়াকু নারী

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৩১৪ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
২১৫ বছর আগে ভারতের কেরালা’র রাজা ছিলেন ত্রিভাঙ্কুর। তার আমলে নাকি পুরুষরা গোঁফ রাখতে চাইলেও কর দিতে হতো। আর নারীদের দিতে হতো স্তনকর। আইনটি ছিল এরকম যে, ব্রাহ্মণ ব্যতীত হিন্দুধর্মের অন্য কোন নারী তার স্তন আবৃত রাখতে পারবে না! নারীদের স্তন রাখতে হবে অনাবৃত, উন্মুক্ত! আবৃত করতে হলে বা স্তন ঢেকে রাখতে চাইলে দিতে হবে স্তনশুল্ক! আবার এই শুল্কের পরিমাণ নির্ভর করবে স্তনের আকারের উপর! যার স্তন যতবড় তার শুল্ক ততো বেশী! এই স্তনশুল্কের মোটা অংশ চলে যেত পদ্মনাভ মন্দিরে! গিনেস বুকের তথ্য অনুযায়ী, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী মন্দির! এবার শুনুন আসল গল্প। ৩৫ বছর বয়সী কৃষ্ণ বর্ণের অতীব সুন্দরী এক নারীকে প্রায়ই কাজের জন্য বাইরে যেতে হতো! তবে সে সবসময় তার স্তন ঢেকে রাখতো! হঠাৎ একদিন সে শুল্ক সংগ্রাহকের নজরে পড়লো, শুল্ক সংগ্রাহকরা তার কাছে স্তনশুল্ক দাবী করলো! অস্বীকৃতী জানিয়ে মেয়েটি বললো, স্তন আমার, তাকে আবৃত রাখব, নাকি অনাবৃত রাখব তা ঠিক করার তুমি কে! আমি শুল্ক দেবো না! কিন্তু তাতে লাভ হলো না। প্রতিদিন শুল্ক সংগ্রাহকরা তার বাড়িতে এসে তাকে শুল্ক দেওয়ার জন্য চাপ দিতে লাগলো! দিনে দিনে করের বোঝাও বাড়তে থাকে!
অবশেষে একদিন কর দিতে রাজী হলো মেয়েটি! শুল্ক সংগ্রাহকদের বাইরে অপেক্ষা করতে বলে দরজা বন্ধ করে ঘরের ভিতরে চলে যায় সে, তারপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলে তার স্তন দুটি! নিজের স্তনদ্বয়কে কলাপাতার আবরণে মুড়িয়ে শুল্ক সংগ্রাহকের হাতে শুল্কস্বরূপ তুলে দেয় তার রক্ত মাখা স্তন! তারপর বলে, যে জিনিসের জন্য আমাকে অতিরিক্ত শুল্ক গুনতে হয়, সেই জিনিসই আমি রাখবো না। বিস্বয়ে হতবাক হয়ে যায় শুল্ক সংগ্রাহকসহ পাড়া প্রতিবেশী সবাই! অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মেয়েটির মৃত্যু হয়। পুরো ভারতে ছড়িয়ে পড়ে এই ঘটনা। কয়েকদিন পর রাজা ত্রিভাঙ্কুর স্তনশুল্কসহ সকল প্রকার অবৈধ শুল্ক বাতিল করতে বাধ্য হন! নিজের অজান্তেই মেয়েটি ১৮৫৯ সালে ভারতে সংগঠিত কাপড় দাঙ্গা’র বীজ বপন করে যায়। নিজেকে কতটা ভালবাসলে এমনটা করা যায় ভাবতে পারেন? এই আত্মপ্রেমী নারীর নাম নাঙ্গেলী!
মানুষ নিজেকে সবচেয়ে বেশী ভালোবাসে অথচ নিজের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পুরো কেরালার নারীদের আব্রুরক্ষা করেছিলো বীরাঙ্গনা নাঙ্গেলি। পাঠক! সেও পারতো বাকী সব নারীদের মতো স্তনশুল্ক মেনে নিতে। শুল্ক দেওয়ার মতো সক্ষমতাও তার ছিলো। কিন্তু পৃথিবীতে কেউ কেউ বুকে আগুন নিয়ে জন্মায়। কোনো অন্যায় তাদের সামনে আসলেও তা তাদের বুকে স্থান পায় না, বুকের আগুনে ভস্মিভূত হয়ে যায় সব অন্যায়গুলো। তাইতো নিজের সুখ,শান্তি,চাওয়া-পাওয়া সর্বস্ব উজাড় করে দিয়ে নারীদেরকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখিয়েছিলো নাঙ্গেলি।
পাঠক! কাহিনী এখনো বাকী! নাঙ্গেলির শরীর তখনও চিতায় দাউদাউ করে জ্বলছে। হঠাৎ একটা লোক দৌড়ে এসে সেই চিতার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। লোকটা নাঙ্গেলির স্বামী। ভারতের ইতিহাসে, স্ত্রীর সঙ্গে সহমরণে যাওয়া কোনো পুরুষের প্রথম এবং শেষ ঘটনা। ইতিহাস এই প্রেমিক পুরুষের নাম খোদাই করার তাগিদ অনুভব করেনি। কিন্তু যে আগুন নাঙ্গেলি জ্বালিয়ে দিয়েছিলো গোটা ভারতবর্ষের নারীদের মনে, তা আজও জ্বলজ্বল করে। তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখেছে।
আজ আপনাকে স্তন কেটে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে হবে না, একটা বড় অন্যায় আপনার উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। আপনি আপনার অবস্থান থেকে সেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন!
।। সংগৃহীত।।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর ....

All rights reserved © 2020 tajasangbad.com
Design & Developed BY Anamul Rasel
x