মিরপুর প্রতিনিধি : মেয়রের ভোট প্রকাশ্যে দেওয়ার নির্দেশ দিযেছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভার আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এনামূল হক।
তিনি গত ০৯ জানুয়ারি পৌর এলাকায় একটি নির্বাচনী সভায় সমর্থক ও ভোটারদের উদ্দেশে বলেছেন, কাউন্সিলরের ভোট দু’টি গোপন কক্ষে গিয়ে আর মেয়রের ভোটটি সবার সামনেই দিতে হবে। বুধবার (১৩ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ক্লিপ ফাঁস হওয়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আরিফুল ইসলাম।
ফাঁস হওয়া ভিডিও ক্লিপে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এনামূল হককে নির্বাচনী সভায় ভোটারদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, আপনি যদি ওপেন ভোট দেন, তাহলে তো কেউ নিষেধ করতে পারবে না। কারণ আপনাদের মধ্যে যাতে দূরত্ব না বাড়ে। ভোট আপনিও দিতে চেয়েছেন, আরেকজনও দিতে চেয়েছে। এখন আরেকজন যদি ভেতরে ঢুকে ভোট দেন, তাহলে মনে সন্দেহ দেখা দেবে। মনে হবে, তিনি হয়তো নৌকায় ভোট দেননি। তাই আপনারা সব ওপেন করে দেন। তাহলে আর একের প্রতি অপরের সন্দেহ থাকবে না। আপনারা কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরের ভোট ভেতরে গিয়ে দেবেন আর এ ভোটটি (মেয়র) সরাসরি সামনে দেবেন।
এক মিনিট ২২ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ক্লিপে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীকে আরও বলতে শোনা যায়, ভোট ভয়ের কোনো ব্যাপার না, আমি যদি ওপেন সিল মেরে দিই, তাহলে কারো কিছু বলার নেই। সবাই নৌকায় সিল মেরে দেবেন প্রকাশ্যে, কোনো সমস্যা নাই, যেখানে সবাই একতরফা ভোট দেবে, সেখানে কেন আপনি সন্দেহের মধ্যে থাকবেন। তাই কাউন্সিলরের দু’টি ভোট গোপন কক্ষে আর মেয়রের ভোটটি প্রকাশ্যে দেবেন, কাউকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এনামূল হক সাংবাদিকদের বলেন কুষ্টিয়া মিরপুর পৌরসভার ভোট শান্তি পূর্ণ হবে। নৌকার প্রার্থীরা কিভাবে নৌকায় ভোট দিবে এবং তাড়াতাড়ি করে দিবে এবিষয়ে আমি সবাইকে ভোট সম্পর্কে তুলে ধরেছি। নৌকা প্রার্থীদেরকে প্রকাশ্যে ভোট দিতে বলেছি। অন্য কোন প্রার্থীর ভোট প্রকাশ্য দিতে বলেনি। এটা একটি ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আমাকে হেয়পতিন্ন করার জন্য এ কাজ করা হয়েছে।
নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি জানার পর মেয়র প্রার্থী এনামূল হককে ডেকে এনে সতর্ক করা হয়েছে। তাকে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের পরও কেন ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান এ রিটার্নিং অফিসার।