বিশেষ প্রতিবেদক: গড়াই নদীর গুরুত্ব শিরোনামে স্পেশাল নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের অনলাইন নামে এক সোশ্যাল মিডিয়াতে আলোচনায় উঠে এসেছে এ নদীর প্রবাহ না থাকলে দক্ষিণে ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নেমে যাবে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সরওয়ার মুর্শেদ বলেন, গড়াই নদীতে পানি না থাকলে কুষ্টিয়ায় নলকুপে পানি পাওয়া যায় না। মরুকরণ এবং লবণাক্ততা ঠেকাতে এই নদীতে যে কোন মূল্যেই পানিপ্রবাহ ধরে রাখতে হবে।
স্পেশাল নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক হাসান জাহিদের সঞ্চালনায় অনলাইন আলোচনায় অংশ নেন রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ ও জিবিএম পিপলস নেটওয়ার্কের গঙ্গা বেসিন কো-অর্ডিনেটর গড়াই পাড়ের নদীকর্মী খলিলুর রহমান মজু।
অধ্যাপক ড. সরওয়ার মুর্শেদ বলেন, পুরো দক্ষিণে সেচের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা, মিঠা পানির সরবরাহ করে সুন্দরবন এবং খুলনা বিভাগের প্রাকৃতিক পরিবেশ ঠিক রাখতে গড়াই-এর গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি বলেন নদীকে মায়ের মতো দেখতে হবে। ক্ষমতাবানদের লোভ দূর করতে হবে। মরুকরণ এবং লবণের আগ্রাসন ঠেকাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, গড়াই নদী খননের মতো প্রকল্পে স্থানীয়দের যুক্ত করতে হবে। তাদের পরামর্শও নিতে হবে। সব প্রকল্পে এমনটি বলা থাকলেও তা করা হয়না। কুষ্টিয়ার মানুষ গড়াইয়ে ড্রেজিং শুরু হলে তারপর জানতে পারেন। তবে তিনি বড় ইলেক্ট্রনিক ড্রেজার আনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ধন্যবাদ জানান। বলেন, এর মাধ্যমে কতটুকু মাটি-বালু তোলা হচ্ছে তা জানা যাচ্ছে। তিনি বলেন, গড়াইয়ে পলিপ্রবাহ বেশি। তারওপর এখানে ১২ কিলোমিটারের মধ্যে ৫টি সেতু হয়েছে। এর পিলারের কাছে পলি জমছে বেশি। মোহাম্মদ এজাজ বলেন, বিশেষজ্ঞদের মত নিয়ে রিমোর্ট সেন্সিং-এর মাধ্যমে ছোট ছোট ড্রেজিং করতে হবে। বড় বাজেটের দিকে না গিয়ে ছোট ছোট প্রকল্প নিলে বরং কাজে লাগবে।
জিবিএম পিপলস নেটওয়ার্কের গঙ্গা বেসিন কো-অর্ডিনেটর গড়াই পাড়ের নদীকর্মী খলিলুর রহমান মজু বলেন, গড়াই নদী দূষণ হচ্ছে। ড্রেনের মাধ্যমে ময়লা পানি এবং পয়বর্জ্য যাচ্ছে। ছোট ছোট দখলও হচ্ছে। পার্ক হয়েছে নদী ভরাট করে। ওয়াকওয়ের পাশে ভরাট করে বস্তি বসানো হয়েছে। গড়াই নদী খননের নামে কোটি কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা।
গড়াই নদী পদ্মা নদী হতে উৎপত্তি। কুষ্টিয়া শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মাগুরা জেলায় মধুমতি নদীতে পতিত হয়েছে। এর মধ্যে ঝিনাইদহ এবং রাজবাড়ী জেলার ওপর দিয়ে গেছে নদীটি। গড়াই নদী-মধুমতী নদীর গতিপথ আঁকাবাঁকা ও দীর্ঘ। গড়াই নামে ৮৯ কিমি, মধুমতী নামে ১৩৭ কিমি এবং বলেশ্বর নামে ১৪৬ কিমি অর্থাৎ মোট দৈর্ঘ্য ৩৭২ কিমি। গড়াইয়ের বহু শাখা-প্রশাখা রয়েছে- কুমার নদী, কালীগঙ্গা, ডাকুয়া, বুড়ি গড়াই, বুড়িশাল ইত্যাদি।