রিয়াজুল ইসলাম সেতু, কুষ্টিয়া : বাঙালি জাতির গৌরবের ইতিহাসে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস। ইংরেজদের দুরভিসন্ধিতে ভারত-পাকিস্তান ভাগের পর পূর্ব বাংলার ওপর পাকিস্তানিরা অন্যায়ভাবে অনেক কিছু চাপিয়ে দেয়।
সর্বপ্রথম তারা বাঙালির মাতৃভাষা বাংলাকে বাদ দিয়ে সংখ্যালঘুদের ভাষা উর্দুকে রাষ্ট্রীয় ভাষা করার হীন চক্রান্ত শুরু করে। সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে ১৯৫২ সালে আন্দোলন তীব্র হয়। সেই আন্দোলনে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ যেমন ছিল, তেমনি রক্ত ও প্রাণ দিতে হয়েছে অনেককে। প্রতিবারের মতো একুশে ফেব্রুয়ারিতে সেই ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। তবে এবার বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কার্যক্রম পালন করা হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মূল বেদিতে আলপনার আঁকার কাজ শেষ হয়েছে। চারদিকে বরাবরের মতো শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে। র্যাব-১২ এর পক্ষ থেকে নিয়েছেন নিরাপত্তার ব্যবস্থা । যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পুরো এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় এনে জনসাধারণকে সতর্ক করতে লাগানো হয়েছে ডিজিটাল সাইনবোর্ড।
আজ রাত ১২.০১ মিনিটের সময় কালেক্টরেট চত্বরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এর পর জেলা পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত, মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার, জেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা এবং এর পরে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রদ্ধা জানানোর অনুরোধ করেন তিনি।
এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন কোভিড-১৯ উদ্ভুত পরিস্থিতি বিবেচনায় ‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২১’ সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আগত সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান করতে হবে। এছাড়া, সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রতিটি সংগঠন/প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ জন প্রতিনিধি ও ব্যক্তিপর্যায়ে একসঙ্গে সর্বোচ্চ দুই জন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারবেন। তা যথাযথভাবে অনুসরণ করার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিবেচনায় শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে এ বছর কোন জনসমাগম ও অভ্যর্থনার ব্যবস্থা থাকবে না।
কোভিড-১৯ উদ্ভুত পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে দিবসটি উদযাপনের জন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।