এনামুল হক ইমন, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে নারীকে দিয়ে ফোন করিয়ে ডেকে এনে ঘরে আটকিয়ে পুলিশে দেবার ভয় দেখিয়ে ভ্যানচালককে মারপিট করে ২২ হাজার ৫০০ টাকা কেড়ে নেবার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় সদকী ইউনিয়নের বাটিকামারা গ্রামে ঘটেছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে শনিবার মহিলা সহ ৪ জনকে আটক করেছে কুমারখালী থানা পুলিশ।
প্রতারক চক্র বাটিকামারা গ্রামের রাজু আহমেদের ছেলে জাহিদ হাসান (২৩), মনির হোসেনের ছেলে ফাহিম (১৯), হেকমতের ছেলে রাকিব (২৪) ও মৃত চুন্নু শেখের মেয়ে রেশমা খাতুন ওরফে নুপুর (২৩)।
ভুক্তভোগী ভ্যানচালক মোমিন জানান,গত ৫ এপ্রিল মোবাইলে তার সাথে রেশমার পরিচয় হয়। মোবাইলে কথা চলাকালে রেশমা তাকে বাটিকামারা রেশমার বাড়িতে আসতে বলে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সে রেশমার বাড়িতে আসলে তিনটি ছেলে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মারপিট করে তার কাছে থাকা ভ্যান বিক্রির ২২ হাজার ৫০০ টাকা কেড়ে নেয় এবং বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান বলেন, ভ্যান চালক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। তার প্রেক্ষিতে আসামীদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপার্দ করা হয়েছে। আটককৃতদের নিকট থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে, সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া কথিত মানবাধিকার কর্মী ও ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে চরমে পৌঁছেছে। ভুয়া সাংবাদিকেরা বিভিন্ন প্রতারণার ফাঁদ পেতে এবং গলায় তথাকথিত মানবাধিকার সংগঠনের কার্ড ঝুলিয়ে নিজেদেরকে ‘সাংবাদিক’ পরিচয় দিয়ে নিরীহ ও নিরপরাধ লোকজনকে নানাভাবে হয়রানি করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতারণা করাটাই যেন এসব নামধারী সাংবাদিকদের পেশায় পরিণত হয়েছে।
সূত্র জানায়, সাংবাদিক পরিচয়ে এরা ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দোকানপাট দখল, ধর্ষণ, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়ছে। এই চক্রে বেশ ক’জন নারী সদস্য রয়েছেন বলেও জানা যায়। এরা মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে ‘প্রেস’ কিংবা ‘সংবাদপত্র’ লিখে পুলিশের সামনে দিয়েই নির্বিঘে দাবড়ে বেড়ায়। এদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন যানবাহনও থাকে চোরাই এবং সম্পূর্ণ কাগজপত্রবিহীন। সাংবাদিক পরিচয়দানকারী এসব নামধারী সাংবাদিকদের বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডের কারণে প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকদের ভাবমূর্তি এখন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। বলা যেতে পারে, এসব ভুয়া সাংবাদিকদের দাপটের কারণে প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকরা এখন ‘অসহায়’ হয়ে পড়েছেন।