কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার শহরের জেনারেল হাসপাতালের দায়িত্বরত জেলা শাখার দুই ছাত্রলীগকে মাথায় ও পিঠে ছুরি আঘাতের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সন্ধ্যায় হাসপাতাল চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের আহতরা হলেন রিফাইতপুর এলাকার ওলিউল্লাহ ছেলে মোহাম্মদ হৃদয় ও হাউজিং নিশান মোড় এলাকার আব্দুল আলিমের ছেলে সামিউল হক সম্রাট।
জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ জানান তাদের ছাত্রলীগ কর্মীরা নিরলসভাবে করোনা আক্রান্ত রোগীদের পাশে থেকে সেবা দিয়ে আসছে। করোনাভাইরাসের এ দুঃসময়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে রোগীদের সেবায় গত দুই বছর ধরে কাজ করে চলেছেন ছাত্রলীগের একঝাঁক তরুণ কর্মী। তাদের কেউ অক্সিজেন সিলিন্ডার হাতে আবার কেউ রোগীর সার্বিক সেবায় নিয়োজিত। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালটির ডাক্তার-নার্সদের পাশাপাশি এভাবেই করোনা রোগীদের পাশে রয়েছেন তারা। করোনার এ সময়ে যখন হাসপাতালগুলো নিজেদের জনবল দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে কুষ্টিয়ার এ হাসপাতালটিতে ছাত্রলীগ কর্মীদের এমন সেবামূলক কাজ দৃষ্টান্ত তৈরি করছে। পাশাপাশি ছাত্রলীগের এসব কর্মীরা বিভিন্ন মহলের প্রশংসাও কুড়াচ্ছেন।
জানা গেছে, জীবন বাজি রেখে তারা রোগীদের ওষুধ কেনায় সহায়তা, অক্সিজেন সরবরাহ, রোগীর নাকে অক্সিজেনের নল লাগানোসহ নানা কাজে নিরলসভাবে সহযোগিতা করছেন।
তিনি আরও বলেন, এতে আমাদের জীবনের ঝুঁকি আছে। এরইমধ্যে বেশকিছু কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু তারা দায়িত্ব থেকে সরে যাননি। সুস্থ হওয়ার পর ফের যোগ দিয়েছেন কাজে। এতে তাদের মনে কোনও অভিমান নেই। যখন কোনও রোগী করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন, তখন তাদের মুখে থাকে এক তৃপ্তির হাসি। সেই হাসিটুকু এই ছাত্রলীগ কর্মীদের সব কষ্ট লাঘব করে দেয়।
ছাত্রলীগ কর্মীরা যেভাবে করোনার আক্রান্ত মানুষকে বাঁচাতে লড়াই করে চলেছেন তা নজিরবিহীন। হাসপাতালের লোকবল সংকটকে বুঝতেই দিচ্ছেন এই ছাত্রলীগ কর্মীরা।
তিনি আরও বলেন গতকাল অপরিচিত কিছু ব্যক্তি জোর করে করোনা ওয়ার্ডে ঢোকার চেষ্টা করে। এতে বাধা দিতে গেলে কথা কাটাকাটি হয় এবং এখানে কিছু অক্সিজেন দালাল চক্র রোগীদের কাছে অক্সিজেন সংকট দেখায়ে বেশি দামে অক্সিজেন বিক্রি করেছেন। এতে বাধা দিতে গেলে তারা রাগান্বিত হয়ে হাসপাতাল থেকে বেড়িয়ে যায়। হৃদয় ও সম্রাট করোনা রোগীদের জন্য ওষুধ কিনতে গেলে অক্সিজেন দালাল চক্র তাদের পথ আটকিয়ে ছুরি আঘাত করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের দুজনকে জরুরী বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় এবং চিকিৎসা প্রদান করেন চিকিৎসক বর্তমানে তারা দুইজনই জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার মডেল থানার ওসি ছাব্বিরুল আলম জানান বিষয়টি নিয়ে আমরা অবগত আছি। তবে যারাই এ ধরনের নেক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।