এস, আর শরিফুল ইসলাম রতন,লালমনিরহাট : বিএনপি,র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নির্দেশে ও বিএনপি,র কেন্দ্রীয় কমটির সাংগঠনিক সম্পাদক(রংপুর বিভাগ) অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি। দলে তৃনমুল পর্যায়ে নেতৃত্ব এবং দলের ইউনিয়ন কমিটি গঠনে তৃণমূল পর্যায়ে সভাপতি, সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব বাছাইয়ে সরাসরি ব্যালট এর মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যতিক্রমি এ আয়োজন শুক্রবার বিকেলে উত্তরের জেলা লালমনিরহাটের সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত হয়। সরেজমিনে দেখা যায় বিএনপির তৃনমুল পর্যায়ে নেতৃত্ব নির্বাচনে কেন্দ্রে কেন্দ্রে সরাসরি ব্যালট পেপারে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা।
দলীয় সুত্রে জানা গেছে, মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতা নিবার্চন করতে উদ্যোগ নেয় বিএনপির কেন্দ্রিয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু। সে অনুযায়ী লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মহিউদ্দিন আহমেদ লিমনকে প্রধান নিবার্চন কমিশনের দায়িত্ব দেয় দলটি। এরপর নিবার্চন কমিশন প্রথমে ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেন। সেঅনুযায়ী মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নে বিএনপির সদস্যপদ পূরণের মাধ্যমে মোট ৩ হাজার ৩০০ জনকে ভোটার তালিকায় অন্তুভুক্ত করা হয়। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার দুই হাজার এক‘শ জন। আর নারী ভোটার হচ্ছে এক হাজার দুই শত জন। প্রত্যেক ভোটারকে বিএনপির সদস্য হিসেবে আইডি কার্ডও প্রদান করে সংশ্লিষ্টরা। এরপর তফশীল ঘোষণা করা হয় সভাপতি, সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নিবার্চনের জন্য। সেই তফশীল অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার বেলা ৩ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহন চলে মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা নির্বাচনে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিন হাজার তিনশত ভোটারের জন্য মোট চারটি কেন্দ্র ভোটগ্রহন এর জন্য করা হয়। কেন্দ্রগুলোর বাইরে প্রার্থীদের প্রতিক সম্বলিত পোস্টারে ছেঁয়ে গেছে। এসব কেন্দ্রে বুথ অনুযায়ী প্রিজাইডিং ও পুলিং অফিসার ছিলেন মোট ৩০ জন। শুক্রবার বিকেলে ৩ টায় ভোট শুরুর সাথে সাথে দলবেঁধে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও আসতে দেখা যায় ভোট কেন্দ্র। এসব নারীদের মধ্যে অনেকেই কোলের সন্তান নিয়ে এসেছিলেন ভোট দিতে। পাশাপাশি শারীরিক প্রতিবন্ধীসহ অনেক বয়োজেষ্ঠ্য ব্যক্তিকে কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে দেখা গেছে।
মহেন্দ্রনগর ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আসাদুল ইসলাম (৬৫) শুধু বিএনপি নয়, এভাবে প্রত্যেকটি দলের নেতা ভোটের মাধ্যমে নিবার্চন করা উচিৎ। তাহলে দলের নেতাদের যেমন জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে, তেমনি দেশের গণতন্ত্র অনেক মজবুত হবে বলে মনে করেন তিনি। একই কথা বলেন জয়নাল আবেদিন (৫৫) নামের অপর এক ভোটার।
ওই ভোটকেন্দ্রের বাইরে লিফলেট নিয়ে প্রচারণা করতে দেখা যায় দিশা নামের এক তরুনীকে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বাবা দুলাল হোসেন মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট করছেন। তার জন্যই আমি ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছি। আর রাজনৈতিক দলের জন্য নেতা নিবার্চনে এমন ভোট গণতন্ত্রেও জন্য অনেক মঙ্গল বয়ে আনতে বলে মনে করেন ওই তরুনী।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা বিএনপি সুত্রে জানা যায়, মহন্দ্রেনগর ইউনিয়ন বিএনপির ৩ পদে দুজন করে মোট ছয়জন প্রতিদ্বন্দী করছে। এরমধ্যে সভপাতি পদে কলস প্রতিক নিয়ে নিবার্চন করছেন নুরুজ্জামান ও ছাতা প্রতিকে শফিকুল ইসলাম। সাধারণ সম্পাদক পদে আবু হোসেন রিক্সা প্রতিকে আর দুলাল হোসেন ফ্যান প্রতিকে। আর সাংগঠনিক সম্পাদক পদে তালা প্রতিকে এনামুল হক এবং আজিজুল ইসলাম নিবার্চনে অংশ নেন মাছ প্রতিক নিয়ে। এসব পদে মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছিল যথাক্রমে ৫০০, ৪০০ ও ৩০০ টাকায়। প্রার্থীদের প্রতিক বরাদ্দের পর টানা ১০ দিন ধরে প্রচার প্রচারণা চলছিল। এবিষয়ে মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের বাসিন্দ জানাহার হোসেন বলেন, তিনি ভোটার না হলেও টানা ১০ দিন থেকে মাইকিংসহ নানা প্রচার প্রচারণা দেখেছেন তিনি। আর ওই প্রচারণা কোন ইউনিয়ন পরিষদের ভোটের মতই দেখেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মহন্দ্রেনগর ইউনিয়নের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন লিমন বলেন, ‘ওয়ার্ড বিএনপির তালিকাভ‚ক্ত সদস্যরা নিজেদের পরিচয়পত্র নিয়ে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে নিজেদের ভোট প্রয়োগ করেছেন। আর অন্যান্য নির্বাচনের মতোই বিএনপির এ নির্বাচনেও সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে’।
জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষক একেএম মমিনুল হক বলেন, ‘বিএনপি পুরোপুরি স্বচ্ছতার ভিত্তিতে তৃণমূলের নেতা সরাসরি নির্বাচনের ভোটের পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। পাশাপাশি মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ারও এটি একটি প্রতিবাদ’।