আরাফাত হোসেন, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় পৃথক দুটি মামলায় স্ত্রী চম্পা খাতুন হত্যার দায়ে স্বামী শাহিনুল মালিথা (৩০) নামে একজনকে মৃত্যুদন্ড এবং হিজড়া রেজাউল ইসলামকে হত্যার দায়ে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ দুপুরের দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ তাজুল ইসলাম আসামীদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষনা করেন। রায় ঘোষনা শেষে আসামীদেরকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায় ২০১৪ সালে মিরপুর নওদা খাড়ারা এলাকায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ এর জের ধরে ঘুমন্ত অবস্থায় রাতে চম্পা খাতুনের শরীরে ও বসত ঘরে তার স্বামী কিরোসিন দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং মেয়েকে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বের হয়ে যায়। ঘটনাটি ধামা চাপা দেওয়ার জন্য স্ত্রী চম্পা খাতুনকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভর্তি করেন। চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ নেওয়ার পরামর্শ দিলে চারদিন পরে স্ত্রী চম্পা খাতুন মারা যান। পরে চাচা শাহাদত বাদী হয়ে মিরপুর থানায় এজাহার দায়ের করেন।
মৃত্যুদন্ড আসামী হচ্ছেন মিরপুর উপজেলার নওদা খাড়ারা শাজাহান মালিথার ছেলে শাহিনুল ইসলাম।
তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আখতারুজ্জামান তদন্ত রিপোর্ট শেষে গত ২০১৬ সালে চার্জসীট দাখিল করেন। মামলার শুনানী শেষে আজ এ রায় ঘোষনা করেন আদালত।
অপর দিকে ২০১০ সালে অক্টোবর মাসের বিকেলে মেজো ভাইয়ের চায়ের দোকান থেকে নাচ গানের জন্য হিজড়া রেজাউল ইসলামকে ডেকে নিয়ে যায় তার বন্ধুরা। ঘটনার তিন চারদিন আগে আসামি জুয়েল রেজাউলের নিকট একটি মোবাইল রেখে ৩০০ টাকা ধার নেন। কিন্তু টাকা ফেরত না দিয়ে মোবাইল ফেরত চান জুয়েল। এ রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে কৌশলে বাড়ী থেকে বের করে নিয়ে যান নির্জন স্থানে এবং রেজাউলকে রাতে কালিশংকরপুর বালুর মাঠ কালভাটের কাছে নিয়ে যেয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ড্রেনের মধ্যে রেখে পালিয়ে যায়। পরে বাদী হয়ে তার মেজো ভাই রবিউল ইসলাম অভিযুক্ত আসামীদের নামে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সাজা প্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছেন : কুষ্টিয়া জেলা শহরের আড়ুয়াপাড়া এলাকার শহীদ লিয়াকত সড়কের আব্দুল মোতালেবের ছেলে খলিলুর রহমান। একই এলাকার জামিরুল ইসলাম জাম্বুর ছেলে মীর সাইমুম ওরফে জিতু, মৃত খাদিমুল ইসলাম টুলুর ছেলে জুয়েল রানা এবং মজিবর রহমান জিন্নাহর ছেলে মিতুল। তবে অপর আসামি জুয়েল পলাতক রয়েছেন। এ মামলায় ৫ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।