অনলাইন ডেস্ক: মায়ের কোলজুড়ে সন্তান এলেও পারিপার্শ্বিক নানা বাস্তবতার কারণে অনেক মা তাকে বুকে ধরে রাখতে পারেন না। কিন্তু তাই বলে সন্তান জন্মের পরপরই আগ-পাছ না ভেবেই রাতের অন্ধকারে নবজাতককে মাঠে ফেলে দেওয়া। এমন পরিস্থিতিতে হয়তো ওই শিশুটির বাঁচারই কথা ছিল না। ছেলে না হয়ে মেয়ে হওয়াতেই নবজাতক শিশুকে মাঠের ফেলে গিয়েছিলেন মা। আর শিশুটিকে‘পরম স্নেহে’ রাতভর আগলে রাখলো একটি মা কুকুর। ভারতের ছত্তীশগঢ়ের মুঙ্গেলী জেলার সরিসতাল গ্রামে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় গ্রামে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য, বিস্ময়ে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে গোটা গ্রাম। গত সোমবার (২০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই সকল তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউ এবং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
কয়েকদিন আগে দিনের শুরুতেই সকালে মাঠের কাছে থাকা একটি ঝোপের মধ্যে থেকে ছোট্ট শিশুর কান্নার শব্দ শুনতে পান কয়েকজন গ্রামবাসী। সেই আওয়াজ অনুসরণ করে ঝোপের কাছে গিয়ে তারা চমকে ওঠেন।
তারা দেখতে পান, সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় ঝোপের মধ্যে একটি শিশু শুয়ে আছে। তখনও ওই নবজাতক শিশুটির দেহে জুড়ে ছিল নাড়ি। শিশুটিকে এ অবস্থায় দেখে যত না অবাক হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা, তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছিলেন পাশে প্রহরী হয়ে বসে থাকা একটি মা কুকুরের ভূমিকায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ওই ঝোপের মধ্যেই একটি কুকুরের বাচ্চা দিয়েছিল। সেই কুকুরের বাচ্চাগুলোর পাশেই শোয়ানো ছিল শিশুটি। আর তার পাশেই অতন্দ্র প্রহরীর মতো বসে ছিল আর এক মা। নিজের সন্তানদের যেভাবে আগলে রেখেছে সে, ঠিক সেভাবেই মানবশিশুটিকেও সারারাত আগলে রেখেছিল কুকুরটি। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, শিশুটির দেহে একটি আঁচড় পর্যন্ত লাগতে দেয়নি সে।
সরিসতাল গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মুন্নালাল প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কাজের জন্য বেরিয়েছিলাম। তখন সকাল ১১টা। হঠাৎই মাঠের কাছে এক শিশুর কান্নার আওয়াজ পেয়ে সেখানে যাই। গিয়ে দেখি একটি সদ্যোজাত শিশুকন্যা কুকুরের পাশে শুয়ে। মা কুকুর এবং তার বাচ্চাও ছিল সেখানে। রাতভর শিশুটিকে আগলে রেখেছিল কুকুরটি।’
পঞ্চায়েত সদস্য আরও বলেন, সঙ্গে সঙ্গেই আমরা পুলিশ এবং স্বাস্থ্য দফতরকে খবর দিই। পরে তারা ঘটনাস্থলে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।