কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কিছুতেই থামছে না ড্রাম ট্রাক, ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা। কুষ্টিয়া শহরের গড়াই নদী বালু উত্তোলনের ফলে দিন দিন ড্রাম ট্রাক চলাচলের আনাগোনা বেশি দেখা দিচ্ছে। ত্রিমোহনী, শ^াশ্মন ঘাটসহ বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে ছোট রাস্তায় বালু বোঝাই ভারি ৬ চাকা ও ১০ চাকার ড্রাম ট্রাক চলাচলের কারণে দূর্ঘটনা দিন-দিন বেড়েই চলছে সেই সাথে পাকা-কাচা সড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
আজ (শুক্রবার) বিকাল ৩.০০ টার সময় হরিশংকরপুর এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় কুষ্টিয়া হরিশংকরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র অনিক (৮) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শ্মশ^ান বালু’র ঘাট পয়েন্ট যাওয়ার পথে ড্রাম ট্রাকের ধাক্কায় প্রথমে আহত হন আক্কাস শাহ ছেলে অনিক শাহা। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় শিশুটিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা দিয়ে চার ঘন্টা পর মারা যায়। শিশুটির মৃত্যু খবর শুনে ভেঙে পড়ে স্বজনরা। উক্ত ড্রাম ট্রাকটি ভাংচুর করেছে এলাকাবাসী। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ট্রাকটি উদ্ধার করে এবং একজনকে আটক করে।
বালু বোঝাই ভারি ড্রাম ট্রাক চলাচল বন্ধ সহ সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে রাতের-আঁধারে অপরিকল্পিত অবৈধ ভাবে বালুর গাড়ি চলাচল বন্ধ করার দাবি ও পরিবেশ রক্ষার্থে সচেতন এলাকাবাসী সংক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন।
এক সপ্তাহ না হতে মৃত্যুর সংখ্যা যোগ হল এ শিশুটি। এর আগে দৌলতপুর তারা গুনিয়ায় ড্রাম ট্রাকের চাপায় দুইজন মোটর সাইকেল চালক নিহত। পরেদিন সকাল সকাল না হতেই ভোর বেলায় তিন জন নারীশ্রমিক ও একজন ভ্যান চালক নিহত হয়। ড্রাম ট্রাক নিয়ে নিউজ করলেও প্রশাসনের চোখে পড়ছে না বলে দাবী এলাকাবাসীর।
এলাকাবাসী জানান, ইজারাদারদের দাপটে এই ড্রাম ট্রাক গাড়িগুলো দিনদিন আরো বেপরোয়া হয়ে চলাচল করতেছে। পর্যাপ্ত পরিমানের বালু লোড নিয়ে তাদের নির্দিষ্ট সাইট নিয়ে চলতেছে না, এতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতেছে। রাত ২টা পর্যন্ত চলাচল করায় শব্দ দূষণের কারণে ঘুম সহ নানান সম্যাসার সম্মুখীন আমরা হচ্ছি। ড্রাম ট্রাক সহ বালু মহল বন্ধ করার জন্য জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সর্বস্থরের জনগণ।
এ বিষয়ে ড্রাম ট্রাকের বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, বলেন তাদেরকে অনেক শর্তক করা স্বত্বেও তারা দিনে এ ধরনের ট্রাক চলাচল করছে। আমরা আটক করলেও তারা পুনরায় এ ধরনের কার্যক্রম চালাচ্ছে। দূঘটনাবলিত পরিবার তাদের মানবেতর জীবন যাপন এবং সর্বশান্ত হতে হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি রোড এন্ড হাওয়ে কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে। গাড়ীর ড্রাইভারগুলোকে সচেতন থাকতে বলার আহবান জানান তিনি।
কুষ্টিয়া হাউওয়ে ওসি জানান ড্রাম ট্রাকের সড়ক দূটনার কারণে তার দুইদিন পরে মালিক ও ড্রাইভারদের সাথে নিয়ে একটি সেমিনার করেছি। তারপর থেকে তাদেরকে কম গতির নির্দেশনা দিয়েছি। তারা পাঁচটির বেশি ড্রাম ট্রাককে বেশি গতি ও হেলাপার গাড়ী চালানো অপরাধে মামলা দিয়েছি। আমাদের অভিযানটি অব্যহত থাকবে বলে তিনি জানান।