কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ায় দেনমোহরের টাকা না দিয়ে স্ত্রী ছনিয়া(২৫) কে হাসপাতালেন স্বামী ইমরান হোসাইন। আজ দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতির ৩য় তলায় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাষ্ট ব্লাষ্টে অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি সাব্বিরুল আলম।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায় দেড় বছর আগে মিরপুর উপজেলার কবর বাড়ীয়া গ্রামের নিবাসী আব্বাসের ছেলে ইমরান হোসাইন এর সাথে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের নিবাসী সহিদুল সর্দ্দারের মেয়ে ছনিয়া খাতুনের সাথে এক লক্ষ টাকা ধায্য করে মুসলিম শরীয়তের বিধান অনুযায়ী তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পার না হতেই যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী ছনিয়া খাতুনকে বিভিন্ন ভাবে শারীরিক ও নির্যাতন করে আসতো তার স্বামী ইমরান। তার স্ত্রীর বাবা মা যৌতুকের টাকা না দিতে পারায় তাকে ডিভোজ দেন তার স্বামী। পরে তার স্ত্রী ছনিয়া খাতুন বাদী হয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির ত্বতীয় তলার ব্লাষ্টে গত ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাষ্ট ব্লাষ্টের মাধ্যমে একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন। উক্ত নোটিশে উল্লেখ থাকে যে, তার স্ত্রীর দেন মোহর ও খোরপোষের ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য অনুরোধ জানান।
পরবর্তী সময়ে আইনী নোটিশের প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের দেনমোহর ও খোরপোষের প্রথম কিস্তি হিসেবে ২৫ হাজার টাকা বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাষ্ট ব্লাষ্টের সহযোগিতা তার স্ত্রীকে প্রদান করেন। পরবর্তীতে আজ দুপুরে বাঁকী ৮০ হাজার টাকা তার স্ত্রী ছনিয়া পাওয়ার আশায় ব্লাষ্ট অফিসে আসেন এবং সেখানে তার স্বামী ইমরান হোসাইনসহ তার পরিবারের সদস্য উপস্থিত হন। এরই এক পর্যায়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগে যায়। তার স্বামীসহ কয়েজকন মিলে তাকে বেধরক মারপিট করে আহত করেন এবং ঘটনাস্থলে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গরা এসে তার স্ত্রী ছনিয়া খাতুনকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাষ্ট ব্লাষ্ট্রের কর্তৃক পক্ষ পুলিশ খবর দেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে তার স্বামী ইমরান হোসেন, শুশ^র আব্বাস এবং তার দুলাভাইকে আটক করে কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাষ্ট ব্লাষ্টে এ্যাডভোকেট শ্রী শংকর মজুমদার বলেন এ সংস্থা বিনামূল্যে আইনগত সকল ধরনের পরামর্শের পাশাপাশি নির্যাতিত, অসহায় ও গরীব মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিনামূল্যে মামলা পরিচালনা করে থাকে এবং নারী নির্যাতনমূলক মামলাসহ পারিবারিক, যৌতুক, বহুবিবাহ, শ্রম বিষয়ক, দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলাসমূহ পরিচালনা করেন। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং মামলার দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি করার লক্ষ্য ধর্ষণ, অপহরণ, এসিড নিক্ষেপ, নারী ও শিশু পাচার সংক্রান্ত মামলায় প্রসিকিউশন হিসেবে তাদেরকে সহায়তা করে থাকে। অসহায় মানুষের মামলাসমূহ মহামান্য সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট এবং আপীল বিভাগে বিনামূল্যে পরিচালনা করেন তারা।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি সাব্বিরুল আলম জানান বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাষ্ট ব্লাষ্টে থেকে ফোন আসে পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠায়। এটা পারিবারিক দ্বন্দ্ব। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। মামলা হলে আমরা আইনী পদক্ষেপ নিব বলে তিনি জানান।