কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ায় আলোচিত ঘটনা মাছ ব্যবসায়ি শহিদুল ইসলামকে হত্যা করে লাশ গুম করার অভিযোগে তিনজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড সে সাথে প্রত্যেকে ২৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত এবং হত্যার সাথে সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত না হওয়ায় তিনজনকে এই মামলার দায় হতে খালাস প্রদান করেন। আজ বিকালে অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মোঃ তাজুল ইসলাম এ রায় ঘোষনা করেন। তবে আসামীরা আদালতে হাজিরার দরখাস্ত জমা দিলেও কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন না।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দহকুলা নওয়াপাড়া গ্রামের পিয়ার আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম ওরফে শহিদ মেম্বার, ভবানীপুর গ্রামের ওমর আলীর ছেলে চান্নু মজিবর রহমানের ছেলে বাক্কার ওরফে বক্কর।
মামলা সূত্রে জানা যায় ২০০৬ সালে নিহত মাছ ব্যবসায়ি শহিদুল ইসলাম ও প্রতিবেশী নামদার সোর্স হিসেবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনদের সাথে মাঝে মধ্যে চলাচলের কারণে এলাকার সন্ত্রাসী সাদ্দাম বাহিনী নামক সদস্যরা সন্দেহ করিত। এ সন্দেহে গত ২০০৬ সালে ১২ ডিসেম্বর ০৬ তারিখে সন্ধ্যার দিকে উপরোক্ত আসামীরা বাড়ী থেকে অপহরণ করে ধরে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। মাছ ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামকে নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ গুম করে কুয়ার মধ্যে ফেলে রাখে। আসামীদের ভয়ে চার বছর পরে অর্থাৎ ২০১০ সালে কুষ্টিয়া মডেল থানায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা এস এম সহিদুল ইসলাম আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে ২২ মে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। আজ আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী পিপি বলেন, আলোচিত শহিদুল বাড়ীর প্রতিবেশী নামদারকে অহপরণ করে নিয়ে যায় নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে হত্যার পর আসামী চান্নুর বাড়ীর খাটের নিচে রেখে দেয়। জানাজানি হওয়ার ভয়ে বাড়ীর পাশে পরিত্যাক্ত একটি কুয়ার মধ্যে শহিদুলের লাশ ফেলে দেয়। আসামীদের পুলিশ দীর্ঘদিন জিজ্ঞাবাদের পর তারা বিষয়টি স্বীকার করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিত্যাক্ত কুয়া থেকে মানুষের হাড় হাড্ডি পান এবং নিহত শহিদুল ইসলামের ছেলের সাথে ডিএনএ টেষ্টের পর শহিদুলের হাড় হাড্ডি বলে সনাক্ত করে পুলিশ। আদালতের এ রায়ে নিহতের স্বজনেরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে তিনি জানান।