1. riajul.kst1@gmail.com : riajul :
  2. riajul.kst@gmail.com : riajul.kst@gmail.com :
বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩, ০৩:১৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে জোড়া খুনের ঘটনায় মডেল থানার ওসি ক্লোজ

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২১ মে, ২০২৩
  • ১৯৫ বার নিউজটি পড়া হয়েছে

এক ইউনিয়নে চা-মুদির দোকানে দেড় শতাধিক জুয়ার আসর

কুষ্টিয়ার সর্ববৃহৎ ইউনিয়ন হাটশ হরিপুর। ইউনিয়নটিকে তিন দিক থেকে ঘিরে রেখেছে পদ্মা এবং গড়াই নদী। শহরের কোল ঘেঁষে থাকা ইউনিয়নটির অলিতে-গলিতে গড়ে উঠেছে মাদক স্পর্ট ও জুয়ার আসর। ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডের প্রায় দেড় শতাধিক আসরে দিনে রাতে প্রকাশ্যে চলছে জুয়া খেলা। চা ও মুদির দোকানের মধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে এসব জুয়ার আসর। এছাড়াও প্রায় ২৫টি স্পর্টে চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। এসব জুয়া ও মাদক ব্যবসায় রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালীদের ইন্ধন থাকায় আইন-শৃংখলা বাহিনী কঠোর হতে পারছেন না। যার কারণে দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ী ও জুয়ায় আসক্তরা। বিষয়টি স্বীকার করে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক হোসেন মাসুদ বলেন, ইউনিয়নে জুয়া খেলা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কিশোর-তরুণরা জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। এই জুয়ার কারণে এলাকায় মাদকের কারবারও বাড়ছে।
এদিকে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে শহর লাগোয়া হাটশ হরিপুর ইউনিয়নে শুক্রবার রাতে দুপক্ষের সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও আহত হয় দশজন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ইউনিয়নের বাহির বোয়ালদাহ ভুতপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন প্রয়াত ভাষান কেদির ছেলে ওমর আলী (৬২) ও শুকলাল মিয়ার ছেলে মিরাজ হোসেন (৪৮)। এদের মধ্যে ওমর আলী হলেন কৃষক এবং মিরাজ হোসেন ফেরিওয়ালা। ঘটনার পর পুলিশ সাতজনকে আটক করেছে। এরা হলেন জিন্না গাইনী (৬০), কালু (২৪), হসিবুল (২২), বাবু (৩০), সবুজ (২৬), চান্নু (২৭) ও রাজিব (৩০)। আটক সবাই স্থানীয় বাসিন্দা।
ওই জোড়া খুনের ঘটনার ১৪ ঘন্টার মাথায় শনিবার দুপুর ১২টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদৎ হোসেনকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। মডেল থানার ওসি (তদন্ত) জহুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওসি স্যারকে ক্লোজ করা হয়েছে। তবে কি কারণে ক্লোজ করা করা হয়েছে সঠিক বলতে পারবো না।
স্থানীয়রা জানান, নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে শহর লাগোয় হরিপুর ইউনিয়নের মোট জনসংখ্যা ৪২,৫৭৫ জন। ইউনিয়নটিতে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা। ২০১৭ সালে গড়াই নদীর উপর হরিপুর কুষ্টিয়া শেখ রাসেল সংযোগ সেতু নির্মাণ হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যপক উন্নতি হয়েছে। সেই সাথে মাদক ব্যবসাসহ অপরাধ জগতের উন্নতিও হয়েছে ওই ইউনিয়নে। অপরাধীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে নদীতে ঘেরা ইউনিয়নটি।


সুত্রে জানা যায়, ইউনিয়নের এক নং ওয়ার্ডে আমজাদ মোড়ের চা ও মুদির দোকানে বসছে একাধিক জুয়ার আসর। এখানে আমজাদ নিজেই জুয়া খেলানোর মুল হোতা। ২ নং ওয়ার্ডের মাঠপাড়া মমিনের চায়ের দোকান ও নদীর ধারে ঝন্টুর দোকানসহ চারটি দোকানের মধ্যে চলছে জুয়ার বোর্ড। একই ওয়ার্ডের ডাবলু কশাইয়ের বাড়ির পাশে শাবলুর মুদির দোকানে চলছে জুয়ার আসর। চার নং ওয়ার্ডের মবিরের মোড়, হাজিপাড়া, মেছোপাড়া, ভাঙ্গনীপাড়া, মারিপাড়া ও ভুতপাড়া এলাকায় রয়েছে একাধিক জুয়ার আসর। ৫নং ওয়ার্ডে কান্তিনগর মোড় ও বাহির বোয়ালদাহে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি জুয়ার আসর। ছয় নং ওয়ার্ডের পুরাতন কুষ্টিয়া দরগাপাড়া ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পাঁচ থেকে ছয় স্থানে রয়েছে জুয়ার আসর। ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ অবস্থা সাত নং ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডের মুচিপাড়া শহিদুল মার্কেটের মধ্যে চারটি ও ইউনিয়ন পরিষদের সামনে, মামুন নদীয়ার বাড়ির সামনে উজ্জলের দোকানের পিছনে, আরাকা মসজিদের সামনে, কাবিল কিন্ডার গার্ডেনের সামনে সাইদুলের মুদির দোকানে, ফুলতলা বর্তমান চেয়ারম্যান মাসুদের শিশু বাগানের সামনে সালামের চায়ের দোকানসহ প্রায় ২০ থেকে ২৫ স্থানে বসছে জুয়া খেলার আসর। ৮ নং ওয়ার্ডের মোহনার টেক ও তারাপদ ডাক্তারের মোড়েও রয়েছে একাধিক জুয়ার আসর। ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে যেতে হয়। সেখানেও দিনে রাতে ১০ থেকে ১২টি জুয়ার আসর বলে জানান স্থানীয়রা।
দীর্ঘদিন শান্ত থাকা ইউনিয়নটি জুয়ার আসর ও মাদক ব্যবসা নিয়ে আরারো উত্ত্প্ত হয়ে উঠছে। প্রায়ই ঘটছে ছোটখাট সংঘর্ষের ঘটনা। তবে শুক্রবার রাতে জুয়া খেলা নিয়ে সংঘর্ষে জোড়া খুনের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের বরাতে পুলিশ জানায়, ভুতপাড়া মোড়ে স্থানীয় বাসিন্দা নান্নু মিয়ার ছেলে আরিফের চা দোকানে নিয়মিত অনলাইন জুয়া খেলা হয়। সেখানে কিশোর-তরুণরা জুয়া খেলে।
ওমর আলীর ছেলে ও মিরাজের ছেলে ওই চা দোকানে জুয়া খেলে মোটা অংকের টাকা হেরে যান। এরপর ওমর আলী ও মিরাজ শুক্রবার রাত ৯টার দিকে আরিফের চা দোকানে যান এবং অন্য জুয়াড়িদের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়ান।
পুলিশ জানান, দুপক্ষের তর্কাতর্কের এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি ও সংঘর্ষ হয়। দুপক্ষের মধ্যে দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘর্ষ চলাকালে ওমর আলীর মাথায় লাঠি এবং মিরাজের বুকে ধারালো অস্ত্রের আঘাত লাগে। “আহতদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ওমর আলী ও মিরাজ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর ....

All rights reserved © 2020 tajasangbad.com
Design & Developed BY Anamul Rasel
x